আদালত অবমাননায় শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড

নির্দেশ অমান্য করায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়

ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আলম বুলবুলের ২ মাসের কারাদণ্ড

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আদালত অবমাননার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৬ মাসের এবং ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ ঘোষিত নেতা শাকিল আলম বুলবুলকে ২ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। অভিযুক্তরা আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে ট্রাইব্যুনালে হাজির না হওয়ায় এ রায় দেওয়া হয়।

আদালত অবমাননার মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একই মামলায় শাকিল আলম বুলবুলকে ২ মাসের দণ্ড দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২ জুলাই) বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণা করেন।

ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, “আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি”—এমন একটি বক্তব্যসংবলিত অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা শেখ হাসিনার কণ্ঠ বলে দাবি করা হয়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ফরেনসিক পরীক্ষায় নিশ্চিত করে—অডিওটি শেখ হাসিনার কণ্ঠেরই।

এই বক্তব্য আদালতের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে—এমন অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করে প্রসিকিউশন। এরপর অভিযুক্তদের ১৫ মে’র মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কোনো জবাব না আসায়, ২৫ মে তাদের হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে ২৬ মে ‘যুগান্তর’ ও ‘নিউ এজ’ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ৩ জুন সকাল ১০টায় ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দিতে বলা হয়। কিন্তু অভিযুক্তরা আদালতের সেই নির্দেশও অমান্য করেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে আদালত বুধবার শুনানি শেষে এই দণ্ডাদেশ ঘোষণা করে।

মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে যুক্ত ছিলেন আমির হোসেন। আদালতের নিযুক্ত অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামান।

রায়ে বলা হয়, দণ্ডপ্রাপ্তদের গ্রেফতার অথবা আত্মসমর্পণের দিন থেকে দণ্ড কার্যকর হবে।

আদালতের এই ঐতিহাসিক রায় নিয়ে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, এই মামলার ফলাফলে ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে।

Hot this week

spot_img

Related Articles

spot_imgspot_img