ইসরায়েল নেমেছিলো কোন সামরিক অস্ত্র নিয়ে?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | TV TODAY
প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২৫
মধ্যপ্রাচ্যের অস্থির রাজনৈতিক বাস্তবতায় ইসরায়েল ও গাজার মধ্যে সংঘাতের মাত্রা আবারও বেড়েছে। সর্বশেষ সামরিক অভিযানে ইসরায়েল জড়িয়েছে একাধিক উচ্চ প্রযুক্তির অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে—এই সংঘাতে ইসরায়েল ঠিক কী ধরনের সামরিক শক্তি ব্যবহার করেছে এবং কী তার কৌশলগত লক্ষ্য?
উন্নত প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান ও ড্রোনের ব্যবহার
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) এই অভিযানে ব্যবহার করেছে মার্কিন নির্মিত F-35 স্টিলথ যুদ্ধবিমান। রাডার ফাঁকি দিয়ে গভীর হামলা চালাতে সক্ষম এই বিমানগুলো ছিল গাজার বিভিন্ন স্থাপনায় নিশানা বর্ষণের মূল হাতিয়ার।
এর পাশাপাশি ব্যবহৃত হয়েছে হার্মেস ৯০০ ও হার্মেস ৪৫০ সিরিজের ড্রোন—যা নজরদারি ও নির্ভুল আক্রমণ দুই কাজেই ব্যবহৃত হয়।
স্থল হামলায় ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান
গাজার সীমান্তে Merkava IV মডেলের আধুনিক ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান মোতায়েন করা হয়। এই ট্যাঙ্কগুলোতে রয়েছে উন্নত সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং রাতের অন্ধকারেও টার্গেট শনাক্ত করার প্রযুক্তি।
আকাশ প্রতিরক্ষা: আয়রন ডোমের সক্রিয়তা
হামাস ও ইসলামিক জিহাদ গাজা থেকে রকেট নিক্ষেপ করলেও ইসরায়েল Iron Dome প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রকেট সফলভাবে প্রতিহত করেছে।
Apache হেলিকপ্টার ও রাডার সিস্টেম
আকাশ থেকে নির্দিষ্ট ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নিশানা নির্ধারণ ও আক্রমণের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে AH-64 Apache হেলিকপ্টার। এগুলো থেকে চালানো গাইডেড মিসাইল হামলায় বহু ভবন ধ্বংস হয়েছে।
সামরিক কৌশল ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ
ইসরায়েলি অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য ছিল মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি করা। ইলেকট্রনিক ও স্যাটেলাইট-ভিত্তিক নজরদারি, এলাকা ঘিরে ফেলা, এবং বিশাল শব্দে অস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে মানসিক ভীতি তৈরির কৌশল চালানো হয়।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও মানবাধিকার উদ্বেগ
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই অভিযানে অতিরিক্ত বল ব্যবহারের অভিযোগ এনেছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, বেসামরিক এলাকায় এইসব অস্ত্রের ব্যবহার যুদ্ধাপরাধের আওতায় পড়তে পারে।
বিশ্লেষণ: শক্তির প্রদর্শন না কৌশলগত হুমকি?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসরায়েলের এই অভিযান কেবল হামাস দমন নয়, বরং আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে সামরিক বার্তা প্রদান। এটি একটি কৌশলগত ‘পাওয়ার শো’ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
উপসংহার
ইসরায়েল এ যুদ্ধে যে সামরিক শক্তি ব্যবহার করেছে তা কেবল একটি সংঘাতের নয়, বরং এক বিশ্বব্যাপী নজরকাড়া সামরিক প্রদর্শনী। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়—এই শক্তি কি শান্তি আনবে, না আরও সহিংসতার জন্ম দেবে?